ফুলকপি একটি সুস্বাদু সবজি,ক্যানসার সহ প্রায় অর্ধশতাধিক রোগের মহৌষধ ।
জেনে নিন আমাদের খুব পরিচিত একটি সবজি, ফুলকপি পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি। এই
পাতার উপরিভাগে ক্যানসার নিরোধক উপাদান পেয়েছেন বলে একদল বিজ্ঞানী
জানিয়েছেন।
বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন, কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি
অর্ধেক কমাতে হলে সপ্তাহে প্রায় এক কেজি ফুলকপি এবং সমজাতীয় শাকসবজি খেতে
হবে। ফুলকপির কচি পাতা সপ্তাহে প্রায় ৩০ গ্রাম পরিমাণে খেলে ওই
ক্যানসারের
ঝুঁকি অর্ধেক কমতে পারে।
আরেক গবেষণায় দেখা যায়, ফুলকপির কচি পাতা থেকে সংগৃহীত আইসো
থায়োসায়ানেটস নির্যাস প্রয়োগে বুকের টিউমারের আকার ও সংখ্যা কমে। এসব
টিউমার ক্যানসারে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ছিল।
খাওয়ার উপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম ফুলকপির পাতায় ক্যালসিয়াম ৬২৬
মিলিগ্রাম ও আয়রন ৪০ মিলিগ্রাম থাকে। ফুলকপির পাতায় প্রচুর ভিটামিন ‘এ’,
ক্যালসিয়াম, আয়রন আছে। এতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কালো কচুশাকের চেয়ে
প্রায় দেড় গুণ, সবুজ কচুশাকের চেয়ে প্রায় ৩ গুণ, লালশাকের চেয়ে
দ্বিগুণ, কলমিশাকের চেয়ে ৬ গুণ, পুঁই ও পাটশাকের চেয়ে ৭ গুণ, পালং ও
ডাঁটাশাকের চেয়ে ৮ গুণ, মুলাশাকের চেয়ে ২৫ গুণ ও গরুর দুধের চেয়ে ৫ গুণ
বেশি।
ফুলকপির কচি পাতায় প্রায় সব খাবারের চেয়ে অনেক বেশি আয়রন আছে। যেমন:
সবুজ কচুশাকের চেয়ে ৪ গুণ, ডাঁটা শাকের চেয়ে দেড় গুণ, কলমিশাকের চেয়ে
১০ গুণ, মুলাশাকের চেয়ে ১২ গুণ ও পালংশাকের ৫ গুণ বেশি। তবে এই পুষ্টিমান
ফুলকপির জাত ও উত্পাদনের স্থানের ওপর নির্ভরশীল।
ফুলকপির আরও কিছু গুণ
সবজির আধিক্যে ফুলকপির নিজস্ব অবস্থান ভিন্নতর। নানাগুণে গুণান্বিত এই
সবজি রোগ প্রতিরোধক হিসেবে দারুণ উপকারী। তাই খাওয়ার আগে জেনে নিন ফুলকপির
পুষ্টিগুণ।
ফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন ‘বি’, ‘সি’ ও ‘কে’। যা ঠাণ্ডাজনিত সর্দি,
হাঁচি, কাশি, জ্বর জ্বর ভাব, সারা শরীরে ব্যথা ভাব, নাক দিয়ে পানি পড়া,
নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ও ঠান্ডায় কান বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা দূর করে।
অকালে দাঁত লালচে হয়ে যাওয়া ও দাঁতের মাড়ি দুর্বল হওয়া থেকে বাঁচায়।
কারণ ফুলকপিতে রয়েছে দাঁত-মাড়ির উপকারী ক্যালসিয়াম ও ফ্লুরাইড।
এতে দাঁতের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি ও বাড়ন্ত শিশুদের দাঁতের পূর্ণ বিকাশের
জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফুলকপির ডাঁটা ও সবুজ পাতায়ও রয়েছে
প্রচুর ক্যালসিয়াম।
ফুলকপিতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় আয়রন। যা রক্ত তৈরি, গর্ভবতী মায়ের
স্বাস্থ্য, বাড়ন্ত শিশু ও অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমী মানুষের জন্য
অত্যান্ত জরুরি। দেহ গঠনের জন্য রয়েছে প্রয়োজনী আমিষ। ফুলকপিতে রয়েছে
ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’। যা জিহ্বায় ঘা হওয়া, তালুর চামড়া ওঠা বা ছিলে যাওয়া
থেকে রক্ষা করে।
ফুলকপি ক্যান্সারের জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সক্ষম। স্তন ক্যানসার,
কোলন ও মূত্রথলির ক্যান্সারের জীবাণুকে ধ্বংস করে এই সবজি। ক্যান্সারের
জীবাণুকে দেহ থেকে বের করে দেওয়ার জন্য ফুলকপির রয়েছে যথেষ্ট অবদান।
সতর্কতা
কিডনির জটিলতায় ভোগা ব্যক্তিরা চিকিৎসকের পরামর্শে ফুলকপি খাবেন। এতে
আমিষ ও পটাশিয়াম রয়েছে প্রচুর পরিমানে। যা কিডনির জন্য উপযোগী নয়।
0 comments:
Post a Comment