advertisement

adverisement

your javascript ads here

Thursday, 28 July 2016

পেপ্যাল বাংলাদেশে আসছে |||

রেমিট্যান্স

পেপ্যাল বাংলাদেশে আসছে |||


—এ বিষয়ে কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশিত হচ্ছে। এই সংবাদে আমাদের দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও ফ্রিল্যান্সাররা আশা করছেন যে পেপ্যাল ইন্ডিয়ায় ফ্রিল্যান্সারদের টাকা যেভাবে তাঁদের ভারতীয় ব্যাংক হিসাবে পাঠাচ্ছে, ঠিক এভাবে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের টাকাও বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে পাঠাবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পেপ্যাল সরাসরি এমন কোনো সার্ভিস নিয়ে আপাতত বাংলাদেশে আসছে না, আসছে অন্যভাবে। ইদানীং পেপ্যাল ঝুম (xoom.com) নামের
আমেরিকাভিত্তিক একটি অনলাইন রেমিট্যান্স কোম্পানিকে কিনে নিয়েছে, যার মাধ্যমে তারা বাংলাদেশে শুধু রেমিট্যান্সের টাকা পাঠানোর সার্ভিস প্রদান করবে।
ঝুম একটি ‘অনলাইন’ রেমিট্যান্স কোম্পানি। ঝুমের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে হলে প্রথমে xoom.com–এ রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তারপর রেজিস্ট্রেশনের সময় প্রদত্ত ই-মেইল ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ঝুমের ওয়েবসাইটে ভিজিট করে টাকা পাঠাতে হবে। টাকা পাঠানোর ‘উৎস’ হিসেবে ব্যাংক হিসাব, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের নম্বর দিতে হবে। গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাংকের হিসাবের নম্বর উল্লেখ করা যাবে।
xoom.com ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে দেখা গেছে যে টাকা পাঠানোর ‘উৎস’ হিসেবে যেসব ব্যাংকের হিসাব নম্বর দেওয়া যাবে, তাতে পৃথিবীর বহু দেশের বহু ব্যাংক রয়েছে। আর ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের যে নম্বর ব্যবহার করা যাবে, তা যেকোনো ব্যাংক কর্তৃক ইস্যু করা ভিসা ও মাস্টার কার্ড হতে হবে। কিন্তু টাকা পাঠানোর উৎস হিসেবে ‘পেপ্যাল অ্যাকাউন্ট’ নির্বাচন করার কোনো সুযোগ নেই। লক্ষণীয় যে অন্যান্য রেমিট্যান্স কোম্পানির মতো ঝুমের কোনো সরাসরি এজেন্টও নেই, যেখানে গিয়ে ক্যাশ প্রদান করা যাবে।
যেহেতু পেপ্যাল (PayPal) ‘ঝুম’ নামের এই অনলাইনভিত্তিক রেমিট্যান্স কোম্পানিকে কিনে নিয়েছে, তাই আশা করা যায় যে অচিরেই কোম্পানিটি ঝুম সিস্টেমে টাকা পাঠানোর উৎস হিসেবে ‘পেপ্যাল হিসাবকে’ অন্তর্ভুক্ত করবে। তখন আমাদের দেশের অগণিত ফ্রিল্যান্সার সরাসরি তাঁদের পেপ্যাল অ্যাকাউন্টে যে ডলার জমা হবে, তা ঝুমের মাধ্যমে বাংলাদেশে আনতে পারবেন।
পেপ্যাল ইদানীং তাদের ঝুম সার্ভিসের জন্য ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে এমওইউ স্বাক্ষর করেছে। অচিরেই ব্যাংক দুটি ঝুমের সেবা চালু করবে। কিন্তু তা হবে শুধু রেমিট্যান্স সংগ্রহের জন্য।
এই ব্যাংক দুটির মাধ্যমে আমাদের দেশে পেপ্যালের ঝুম সার্ভিস চালু হলেও দেশের অগণিত ফ্রিল্যান্সার এর সুবিধা নিতে পারবেন না, যদি নিচের দুটি শর্ত পূরণ না হয়—
(১) যদি ঝুমের মধ্যে প্রেরকের ‘টাকার উৎস’ হিসেবে পেপ্যাল অ্যাকাউন্ট অন্তর্ভুক্ত করা না হয় (অর্থাৎ পেপ্যাল সিস্টেম ও ঝুম সিস্টেমের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করা না হয়) এবং
(২) যদি বাংলাদেশ ব্যাংক পেপ্যাল অ্যাকাউন্ট থেকে আনা টাকাকে রেমিট্যান্স হিসেবে গণ্য না করে (পেপ্যালে সঞ্চিত টাকা বাংলাদেশে বসবাসকারীদেরই টাকা, তাই এ টাকাকে রেমিট্যান্স বলা যায় না)।
উল্লেখ্য, ইন্ডিয়ায় পেপ্যাল যেভাবে ফ্রিল্যান্সারদের টাকা পাঠায়, তা রেমিট্যান্স নয়। এটাকে একধরনের সার্ভিস এক্সপোর্টের টাকা বলা যায়, যা গতানুগতিক রেমিট্যান্স পদ্ধতিতে সরাসরি আসে না। পেপ্যাল কর্তৃক ঝুমকে কেনার যে সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্য, তা বাস্তবায়ন করতে হলে ওপরের ১ নম্বর শর্ত পূরণ করতেই হবে। তবে প্রশ্ন থেকে যায়, ‘কত দিনে’। অন্যদিকে, বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকও পেপ্যাল অ্যাকাউন্টের টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলে বাংলাদেশে আনতে চায়। তাই আশা করা যায় যে ২ নম্বর শর্ত পূরণে দুই পক্ষের সবাই পেপ্যালের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাবে। অর্থাৎ, ফ্রিল্যান্সারদের অর্থ রেমিট্যান্স হিসেবেই গণ্য করা হবে। তাই আমরা আশা করতে পারি আমাদের হাজার হাজার তরুণ উদ্যোক্তার দীর্ঘদিনের একটি বিরাট সমস্যা এই মুহূর্তে না হলেও অদূর ভবিষ্যতে সমাধান হবে।
আবুল কাশেম মো. শিরিন: ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লি.।

0 comments:

Post a Comment