মানুষের জীবন হল "ঘূর্ণায়মান ঘড়ির কাটার মত সামনের দিকে চলমান"।
কল্পনা করুন আপনার নিজের কথা। যখন আপনি পৃথিবীর বুকে জন্ম নিয়েছেন।
এই সুন্দর পৃথিবী আপনার কাছে ছিলো খুবই বৈচিত্র্যময়
সবই ছিল আপনার কাছে অপরিচিত। সবাই যেন আবার
আপনাকে পেয়ে যেতে উঠেছিল নতুন কোন কল্পনায়।
ধীরে ধীরে আপনি বড় হয়ে লাগলেন।
বিছানা থেকে উঠে বসলেন, তারপর দাড়াতে শিখলেন
এবং আস্তে আস্তে হাঁটতে লাগলেন।
নানা রকম আনন্দ, কল্পনা, ভালোবাসা, কোলাহলের
মধ্যে দিয়ে চলে এলো আপনার বাল্যকাল।
বিদ্যালয়ের মাঠ, শ্রেণীকক্ষ, পড়াশুনা, খেলাধুলা
নানারকম আমোদ ফুর্তির মধ্য দিয়ে হাঁটি হাঁটি
পাঁ পাঁ করে কেটে গেল আপনার বাল্যকাল।
তারপর আপনি হলেন একজন তরুন।
আপনি তখন বিদ্যালয় থেকে চলে আসলেন কলেজে
এবং শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়েও আসতে হয়েছে।
তখন আপনার দিন কাটে পড়াশুনা করে, মোবাইল
ফোনে গল্প করে, মোবাইলের এস এম এস লিখে
বন্ধুদের সাথে দিয়ে। ইন্টারনেট ব্রাউজ করে, ইমেল
পাঠিয়ে, চেটিং করে ফেইসবুকের মতো সোস্যাল
নেটওয়ার্ক সাইটে পেজ খুলে।
আবার কারও সময় কাটে ছাএ পড়ানো অথবা
ছাএদের বাসায় লজিং থেকে রাতের আকাশের
পূর্ণিমার চাঁদের দিকে তাকিয়ে ডায়োরির পাতার মাঝে
নিজের জীবন কাহিনী লিখে।
এসব কিছুর মাঝে কেটে গেল আপনার তরুণ কাল
তা মোটেই লক্ষ্য করতে পারলেন না।
তারপর আপনি হলেন যুবক। ধীরে ধীরে আপনার
সামনে এসে হাজির হতে লাগল অনেক রকম
ব্যস্ততা। চাকুরী কিংবা ব্যবসায় মত পেশায় ডুবে আছেন
এসব কিছুর মাঝে পরিবর্তন করতে হল আপনার
অবস্থা। এতদিন আপনে একা সঙ্গিহীন।
এখন আপনার সাথে আরেকনজনকে বিবাহ বন্ধনে
জীবন সঙ্গিনী হিসেবে একএিত করা হল।
শুরু হল নতুন আর এক অধ্যায়। দুজনের মাঝে
সৃষ্টি হল সুখের সংসার।
তৈরি হল ভালোবাসা, আপনাদের মাঝে জন্ম লাভ
করল ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। সেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মটিকে
নিয়ে তৈরি হল নতুন আর এক স্বপ্ন।
ধীরে ধীরে সেও বড় হতে লাগল, আর আপনি হতে
লাগলেন বৃদ্ধ। আপনি তখন অবসর নিয়ে নিলেন
জীবনযুদ্ধ থেকে। তখন আপনার সময় কাটে সংবাদপএে পড়ে, টেলিভিশন দেখে, প্রার্থনা করে, নাতি- নাতনীর
সাথে গল্প-গুজব করে। কারও আবার তার থেকে
ব্যতিক্রমও ঘটে।
সন্তানের অবহেলার কারণে তখন তাদের সময় কাটে
বৃদ্ধাশ্রমের চার দেয়ালের মাঝে কষ্টও যন্ত্রনা বুকে নিয়ে।
আস্তে আস্তে চারদিকে আঁধার ঘনিয়ে আসে।
জীবনের প্রদীপটা যেন খুবই তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়
তা বুঝা যায় না। কারণে যে পৃথিবীতে জন্ম লাভ করে
তাকে অবশ্যই মৃত্যুবরণ করতে হবে।
কেননা সৃষ্টিকর্তা মানুষকে এই সুন্দর পৃথিবীতে
মাএ কিছু সময়ের জন্য প্রেরণ করছেন,
তা না হলে পৃথিবীতে অনন্তকাল বেঁচে থাকা যেত।
মৃত মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হল সাড়ে তিন হাত
মাটির নিচে একটি ছোট কবর কিংবা শ্বশানের আগুন
পুড়ে ছাই। এটাই মানুষের জীবন।
সবশেষ বলার যায় যে, মানুষের জীবন হল
ঘূর্ণায়মান ঘড়ির কাটার মত সামনের দিকে চলমান।
.
0 comments:
Post a Comment