যৌতুক: স্বামীর বর্বরতায় মৃত্যুর মুখে তাসফিয়া !!!
রাজশাহী ব্যুরো
রিফাহ্ তাসফিয়া সালাম। ভালোবেসে বাড়ির অমতে বিয়ে করেছিলেন দুই বছর আগে। অথচ যৌতুকের জন্য সেই প্রিয় মানুষটির নির্যাতনের শিকার এই তরুণী এখন লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে!তাসফিয়া নগরীর ডিঙ্গাডোবা এলাকার ফজলুল হকের ছেলে শামিউল হক সোহাগের স্ত্রী; ছয় মাস বয়সী একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে এ দম্পতির। মঙ্গলবার বিকেলে তার স্বামী সোহাগকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাসফিয়া সমকালকে বলেন, 'সোমবার বিকেলে ছয় মাসের মেয়েকে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ সে বাড়িতে এসে টাকা চায়। টাকা নেই বলাতে খাটের নিচ থেকে একটি পাইপ বের করে আমাকে পেটাতে শুরু করে। এসময় আমি খাট থেকে মেঝেতে পড়ে যাই। তবুও পেটানো বন্ধ হয়নি; বাড়ির কেউই আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। একপর্যায়ে আমি জ্ঞান হারাই।'
তার স্বজনরা জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে তাসফিয়ার ওপর নির্যাতন শুরু করেন সোহাগ। এরপর মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে সোহাগকে দেড় লাখ টাকাও দেয় তার পরিবার। কিন্তু যৌতুকের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে নির্যাতনের মাত্রাও।
ওই তরুণীর মামা ফজলে রাব্বি সমকালকে বলেন, 'মানুষের কাছ থেকে খবর পেয়ে সোহাগদের বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার ভাগ্নি (তাসফিয়া) মেঝেতে পড়ে আছে। এরপর তাকে সেখানে থেকে এনে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখান থেকে আজ (মঙ্গলবার) তাকে ওসিসিতে আনা হয়।'
মেয়ের এমন পরিণতিতে হতবিহ্বল তাসফিয়ার মা হোসনে আরা পারভীন। তিনি সমকালকে বলেন, 'বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে আমার মেয়েকে নির্যাতন করে আসছিল সোহাগ ও তার পরিবারের সদস্যরা। তার দাবিতে দেড় লাখ টাকাও দেওয়া হয়। প্রায় ছয় মাস আগে তাসফিয়া একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। এরপরও নির্যাতন থামেনি। সোমবার বিকেলে যৌতুকের দাবিতে তাকে আবারও মারপিট করতে শুরু করে সোহাগ।'
এ ঘটনায় নগরীর রাজপাড়া থানায় সোহাগ, তার মা জাহানারা বেগম সুজি (৫০), বাবা ফজলুল হক (৫৬), ভাই ফয়সাল (৩০) ও সজিবের (২৮) বিরুদ্ধে মঙ্গলবার একটি মামলা করেছেন তাসফিয়ার মা।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ বলেন, 'এভাবে কেউ বউকে মারতে পারে তা দেখে অবাক হয়েছি। সোহাগকে মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেফতার করা হয়েছে।'
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
0 comments:
Post a Comment