শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতের কাছে পুলিশের ওপর বোমা হামলার ঘটনায় এক আওয়ামী লীগের কর্মীকে আটক করা হয়েছে।বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানিয়েছে, স্থানীয় ওই কর্মীর নাম বাবুল। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি।
এ ছাড়া ঘটনার পর পরই আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনটি নাইন এমএম পিস্তল এবং কিছু ধারালো অস্ত্র
উদ্ধার করা হয়েছে।পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির একটি তদন্ত দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছে।আজ বৃহস্পতিবার সকালে শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে টহল পুলিশের ওপর বোমা হামলা করে একদল দুর্বৃত্ত। ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যসহ চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাত পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন। আহত পুলিশ সদস্যদের প্রথমে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ছয় পুলিশ সদস্যকে হেলিকপ্টারে করে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম) এ কে এম শহীদুর রহমান জানান, শোলাকিয়ায় নির্বিঘ্নে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানের জন্য পুরো এলাকায় প্রায় ৯ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিলেন। সম্ভবত সন্ত্রাসীদের আরো ব্যাপক হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল।এ ঘটনায় আটক আহত সন্ত্রাসী আবু মুকাদ্দিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশকে জানায়, সে দিনাজপুর থেকে এসেছে। হামলায় তারা মোট পাঁচজন অংশ নেয় বলেও সে জানিয়েছে। তবে তারা কেউ একে অন্যকে চিনত না বলেও দাবি করেছে মুকাদ্দিল।
কিশোরগঞ্জে পুলিশের ওপর বোমা, চারজন নিহত
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুটি পিস্তল ও গুলিসহ দুজনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১৪। তাঁদের একজন মুকাত্তির। অন্যজনের নাম জানা যায়নি।
র্যাব-১৪-এর কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর বলেন, আটক দুজন নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য।
নিহত পুলিশ সদস্যের নাম জহুরুল হক ও আনসারুল। গৃহবধূ হলেন ঝরনা রানী ভৌমিক। হামলাকারীর পরিচয় জানা যায়নি।
এ ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন মিয়া, কনস্টেবল প্রশান্ত, জুয়েল, রফিকুল, তুষার, মশিউর ও আসাদুল। পথচারী তিনজন হলেন আবদুর রহিম, হৃদয় ও মোতাহার।
প্রাথমিকভাবে আহত সবাইকে কিশোরগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের মধ্যে চারজনকে ময়মনসিংহের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতের নিরাপত্তার দায়িত্বে আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে ছিলেন একদল পুলিশ সদস্য। সকাল ৯টার দিকে ঈদ জামাতে অংশ নেওয়ার জন্য মুসল্লিরা আসার সময় একদল দুর্বৃত্ত ৮-১০টি হাতবোমা নিক্ষেপ করে দ্রুত ঘটনাস্থল ছাড়ে। এতে পুলিশ সদস্যরা আহত হন। পরে তাঁদের উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক কনস্টেবল জহুরুল হককে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনা সামলে উঠে পুলিশ হামলাকারীদের ধরতে অভিযান শুরু হলে উভয় পক্ষে গোলাগুলি শুরু হয়। এ সময় পুলিশের গুলিতে এক হামলাকারী নিহত হয়।
কনস্টেবল নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডেপুটি সিভিল সার্জন হাবীবুর রহমান। তিনি জানান, আহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ হোসেন চারজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
0 comments:
Post a Comment