মানবতার রং একটি আর সেটি লাল।
"দি হলি অরটিসান রেষ্টুরেন্ট" এরফ্লোরে ৫/৬ জন জঙ্গী আর হত্যাকান্ডের
শিকার নিরীহ ২০/২৮ (সংখ্যা যাই হোক) জনের রক্তে রঞ্জিত। কেউকি বলতে পারবেন
মিলেমিশে একাকার হওয়া রক্তধারার মধ্যে কোনটি মুসলিম আর কোনটি অমুসলিম রক্ত
?জানি পারবেন না কারন মানবতার রং একটি আর সেটি লাল।২০-২৬ বছরের
এই তরুনেরা - রহমত,
বরকত, নাজাতের মাস রমজান মাসে পরকালে জান্নাত পাবার যে
আশায় এই নৃশংস ঘটনা সংঘটিত করেছে তারা কি আদৌ জানে যে,পবিত্র হাদীসে বর্ণিত আছে,“যে মুসলিম ব্যক্তি মুসলমান রাষ্ট্রে বসবাসকারী একজন অমুসলিমকে হত্যা করবে
সে জান্নাত তো দুরে থাক তারা তার সুগন্ধও পাবেনা যদিও জান্নাতের সুগন্ধ ৪০
বছর সমপরিমান দুরত্ব থেকে পাওয়া যায়”।(সহীহ্ বুখারী সংখ্যা-৩,হাদীস নং-২৯৯৫)
* অবশ্যই এদের ব্রেইন ওয়াশ করা হয়েছে, ভুল বোঝানো হয়েছে, আসল দোষী তো তারাই যারা তাঁদের এমন ভুল বুঝিয়েছে!যে আততায়ী, হিন্দু পুরোহিত ও অমুসলিমদের হত্যা করছে তারা কি আদৌ জানে যে,
পবিত্র হাদীসে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন,“মুসলমান রাষ্ট্রে যদি কোন মুসলমান দ্বারা কোন অমুসলিমের অধিকার ক্ষুন্ন
বা সে নির্যাতনের শিকার হয় যা সে সহ্য করতে পারেনা রোজ কিয়ামতের দিনে আমি
স্বয়ং ঐ মুসলমান ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেব”।(সুনানে আবু দাউদ সংখ্যা নং-৩,পৃঃ-১৭০,হাদীস নং-৩০৫২)
# চিন্তা করুন এখানে তাঁদের হত্যা করা হচ্ছে!
*পবিত্র মদিনার মসজিদে নববীর (সাঃ) কম্পাউন্ডেও দু'দিন আগে ঠিক ইফতারের আগ মুহূর্তে বোমা হামলা, ছিন্নভিন্ন লাশ ! রক্ত ! আহাজারি !
এটা ইসলামের শিক্ষা নয়, তাই যদি হতো, দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ মানুষ, শ্রেষ্ঠ নবী
মক্কা বিজয়ের দিন সবাইকে ক্ষমা করে দিলেন কেন! শুধু ক্ষমা নয় এটাও ঘোষণা
দিয়েছিলেন মক্কাবাসীর কারো বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই! এটাই তো ইসলামী
শিক্ষা! ইসলামকে আল্লাহ দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন মানবতা, আখলাক,
সচ্চরিত্র, আমানতদারী ও অন্যান্য জান্নাতি গুণাবলী দ্বারা। হ্যা ! ক্ষেত্র
বিশেষে অস্ত্র ধরতে হয়েছে তারও যৌক্তিক কারণ আছে, কারণ গাছের ছোট লাকড়ি হাত
দিয়ে ভাঙ্গা যায় বা ছোট অস্ত্র দিয়ে টুকরো করা যায় কিন্তু মোটা কান্ড
কাটতে তো আপনাকে কুড়াল বা করাত ব্যবহার করতে হবে তাই নয় কি ?
#
নিঃসন্দেহে জিহাদ ফরজ ও আল্লাহর হুকুম - কিন্তু সেটা ফরজ হবার অনেক শর্ত
শরীয়তে আছে, কিন্তু আজ স্বরচিত শরীয়ত বানিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা করা হচ্ছে,
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) জিহাদ করেছেন ও সাহাবাদের (রাঃ) জিহাদে পাঠিয়েছেন, তিনি
সাহাবাদের নির্দেশ দিতেন - বৃদ্ধ নর - নারী, শিশু ও মহিলাদের উপর অস্ত্র
তুলবে না এবং অস্ত্র তুলবে না তাঁদের দিকেও যাদের দিক থেকে তোমাদের
আক্রান্ত হওয়ার ভয় নেই।
অথচ দেখুন, জিহাদ তকমা লাগিয়ে নিরীহ মানুষ,
শিশু, নারী হত্যা করা হচ্ছে, ইসলামে এদের স্থান নেই, নেই এবং নেই। এরা
আখিরাতে অভিশপ্ত হবে। নির্বোধের দল এভাবে মানুষ মেরে ভাবছে "মরলেই তো
জান্নাত, আর কি চাই!" যেগুলি মরেছে সেগুলি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে কতোটা
বোকামি দুনিয়ায় তারা করে গেছে। অথচ আল্লাহ বলেছেন ---
"যে ব্যাক্তি কোন
নিরীহ মানুষকে হত্যা করলো সে যেন পুরো মানবজাতিকেই হত্যা করলো, আর যে কোন
নিরীহ ব্যাক্তির প্রান রক্ষা করলো সে যেন পুরো মানবজাতিকেই রক্ষা করলো।"
[সূরা মায়েদাঃ ৩২]
জানি আততায়ী বলেন আর জঙ্গীই বলেন ইসলামের এই দর্শন সম্পর্কে তাদের জানা নেই। কারন ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু হল
# অজ্ঞ_মুসলমানরা । যাদের অজ্ঞতা আমাদের সম্ভাবনাময় তরুণদেরকে চরমপন্থার
দিকে ঠেলে দেয়। তাদের কর্মকান্ড ইসলামের সত্যিকার মানবিক দর্শনকে বিলীন
করে দেয়। আর গোটা পৃথিবী যখন আল্লাহর নামে এই সকল উগ্রবাদী জঙ্গী গোষ্ঠীর
কর্মকান্ডের দিকে তাকায় ভাবে এটাই ইসলাম। যা সত্য নয়। প্রকৃত ইসলাম
মানবিক। বরং সকল ধর্ম থেকে অধিক অধিক এবং অধিক মানবিক।
পরিশেষে,
অভিভাবকদের অনুরোধ করব সন্তানদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার পাশাপাশি
মানবিক শিক্ষায় শিক্ষিত করুন। তাঁদের দিকে নজর রাখুন, নিজের চাকুরী বা
ব্যবসায়ের দোহাই দিয়ে তাঁদের জ্বলন্ত আগুনের মতো খোলা ছেড়ে দিয়েন না।
আল্লাহ আমাদের সৎ বুদ্ধি অর্জন,সুপথে চলার এবং প্রকৃত ইসলাম আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন...
0 comments:
Post a Comment