নদী থেকে দেড় হাত দূরে ভবন !!

শনিবার থেকে ভবনটিতে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দ্বিজেন্দ্রনাথ দাস বলেন, নদী ভাঙতে ভাঙতে এখন ভবন থেকে মাত্র দেড় হাত দূরে রয়েছে। যেকোনো সময় ভাঙনের আশঙ্কায় ওই ভবনে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আশরাফ হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম, বিষয়টি জানা ছিল না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে ভবনটিকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, জরুরি ভিত্তিতে নদীভাঙনের কবল থেকে রক্ষার জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। দরপত্র ছাড়া জরুরিভাবে ৩ হাজার ৬০০ ব্যাগ ফেলার কাজের দায়িত্ব পেয়েছেন আসাদুজ্জামান শামীম নামে এক ঠিকাদার।
স্থানীয় বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগের নেতা আবদুল জলিল জানান, অনেক অনুরোধ করার পরও পানি কম থাকতে কাজ শুরু করা হয় নাই। পানি বাড়ার পরে ঢিমেতালে চারজন শ্রমিক দিয়ে অনিয়মিতভাবে বস্তা ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া ১২০ মিটার এলাকায় কাজ করার কথা থাকলেও মাত্র ৯০ মিটার কাজ করা হয়েছে। নিচের দিকে বস্তা না ফেলায় ঢেউয়ের আঘাতে নিচের দিক থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। এতে করে নদীতে বস্তা ধসে যাচ্ছে। বড় বড় চাপ নিয়ে পাড় নদীতে ভেঙে পড়ছে।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জহুরুল ইসলাম জানান, নদীতীর সংরক্ষণের কাজ সঠিকভাবে ও সঠিক সময়ে করা হয়নি। এতে করে বিদ্যালয়সহ আশপাশের বসতবাড়ি হুমকিতে পড়েছে। বিদ্যালয়টি ভাঙনের হাত থেকে বাঁচাতে না পারলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
ঠিকাদার আসাদুজ্জামান বলেন, কম বস্তা ফেলার অভিযোগ সঠিক নয়। বস্তা ফেলার সময় পাউবোর কর্মকর্তারা থাকেন। বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য স্থায়ীভাবে নদী শাসনের ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে জরুরিভাবে ফেলার জন্য আরও বস্তা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা কমরেড শেখ মো. মনিরুজ্জামান ওরফে সালাম বলেন, বিষয়টি স্থানীয় সাংসদকে জানানো হয়েছে। দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লালগোলা বাজারসহ প্রায় দেড় শ মানুষের বসতবাড়ি হুমকিতে রয়েছে। জরুরিভাবে ব্যবস্থা না নিলে এসব প্রতিষ্ঠানসহ আশপাশের মানুষের আশ্রয়স্থল থাকবে না।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী গৌরপদ সূত্রধর বলেন, ‘কাজ শুরুর সময় নদীতে পানি ছিল। স্থানীয় সাংসদ নদীভাঙন রোধে বরাদ্দের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আমরা এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৩১ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। প্রতিবছর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল করার সুনাম রয়েছে। বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে পাঁচজন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। কয়েক বছর ধরে নদীভাঙনের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। এখন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২১০ জন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির একটি পাকা ভবন, একটি টিনশেড পাকা ভবন ও পাকা শৌচাগার রয়েছে।
0 comments:
Post a Comment