চোখ থেকেও!
অনেকে সেই সময় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছিলেন, কিভাবে সম্ভব এটি। ধ্বংস হয়ে থাকলে তার কোনো না কোনো চিহ্ন থাকত। তন্ন তন্ন করে খুঁজেও ধ্বংসাবশেষের কোনো চিহ্ন মেলেনি সমুদ্রপৃষ্ঠের কোনো জায়গায়। এমন কি, কোনো চিহ্ন পর্যন্ত মেলেনি সমূদ্রের তলদেশেও।
কিন্তু নিউইয়র্ক ম্যাগাজিনে বলা হচ্ছে, কোনো দুর্ঘটনার ফলে বিমানটি গায়েব হয়ে যায়নি। কোনো দুর্ঘটনার কবলেও পড়েনি। বরং গণ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছিল সেদিন, যার পুরো পরিকল্পনা করেন পাইলট নিজেই।
পুলিশের গোপন নথিপত্রে বলা হয়, নিঁখোজ হওয়ার সপ্তাহখানেক আগে বিমানটিকে ভারত মহাসাগরে বিধ্বস্ত করার অনুশীলন করছিলেন পাইলট নিজে। অবশ্য, বস্তুগতভাবে নয়, তিনি অনুশীলন করছিলেন কম্পিউটার সিমুলেশন করে।
অনুশীলনের সময় ক্যাপ্টেন জাহারিয়ে আহমেদ শাহ জ্বালানি শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত বিমান নিয়ে উড়ে বেড়ান মহাসাগরের অনেক দূরবর্তী এলকায়।
ভারত মহাসাগরের প্রত্যন্ত এলাকার আকাশে বিমান নিয়ে উড়ে যাওয়ার আগে কুয়ালালামপুর থেকে বের হওয়ার অনুশীলন করেন তিনি। এ সময় কম্পিউটার সিমুলেশন করে যে রুট তৈরি করেন, তদন্তকারীদের বিশ্বাস সেই একই রুট ব্যবহার করেন তিনি ২০১৪ সালের মার্চে বিমানটি লাপাত্তা হওয়ার আগে।
মালয়েশিয়া পুলিশ এই ঘটনা খতিয়ে দেখার সময় যে কম্পিউটারটি ব্যবহার করেন, সেই কম্পিউটারটি থেকেই কম্পিউটার সিমুলেশনের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে এফবিআই। তবে পুলিশ গত মার্চে তাদের সর্বশেষ রিপোর্ট প্রকাশের সময় এসব তথ্য গোপন করে রাখে।
বিমানটি যখন অদৃশ্য হয়ে যায়, সেই সময় পাইলট জাহারিয়ে আহমেদ শাহের মন ভীষণ বিক্ষিপ্ত ছিল বলে ধারণা করা হয়। কেন না তিনি তার বিয়ে ভেঙে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছিলেন।
পাইলটের স্ত্রী ও মেয়ে সেই সময় বলেছিলেন, বিমানটি অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার আগের কয়েক সপ্তাহ তার মন খুবই বিক্ষিপ্ত ছিল। এ ছাড়া বিবাহ সংক্রান্ত কাউন্সিলিংয়েও উপস্থিত হতে তিনি অস্বীকার করেন।
পাইলটের বৈবাহিক জীবন পুরোপুরি ভেঙ্গে যাওয়ার তিন সপ্তাহ পর বিমানটি হারিয়ে যায়। কিছু কিছু তদন্তকারী মনে করেন, এটি পাইলটের একটি সুচিন্তিত পরিকল্পনা। এ ছাড়া এই ঘটনার মধ্যদিয়ে তার মানসিক হতাশার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে।
কম্পিউটার সিমুলেশন করে তিনি যে পথ ব্যবহার করেন, বাস্তুবে বিমানটির অদৃশ্য হওয়ার আগে তিনি সেই একই পথই ব্যবহার করেন।
কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে জানিয়েছে যে, এলাকা সম্প্রসারিত করে তারা আর বিমানটির খোঁজ করবেন না। বিমানটি ধ্বংসাবশেষের কিছু টুকরো পানিতে ভাসতে ভাসতে বহুদূর মোজাম্বিক পর্যন্ত চলে গেছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
বর্তমানে যেসব এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে, সেসব এলাকায় বিমানটি পাওয়া না গেলে তল্লাশির কাজ বাদ দেওয়া হব। মালয়েশিয়া, চীন ও অষ্ট্রেলিয়ার কর্মকর্তারা শুক্রবার বলছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে বিমানটি পাওয়া না গেলে তল্লাশি পরিত্যক্ত বলে ঘোষণা দেয়া হবে। এই দেশ তিনটি মনে করছে, বিমানটিকে পাওয়ার সম্ভাবনা ফিকে হয়ে আসছে।
0 comments:
Post a Comment