সাবধান! অ্যাম্বুলেন্স ফাঁদ |
দু’মাস আগের ঘটনা। জরুরি এক কাজে প্রায় রাত ১২টার দিকে যশোর যেতে গাবতলী বাস টার্মিনালে আসেন কাজী মাসুদ আহমেদ নামে এক ব্যক্তি। বাস
টার্মিনালে ক’জন যাত্রী দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ‘সরকারি অ্যাম্বুলেন্স’ লেখা
একটি অ্যাম্বুলেন্সে বাসের চেয়ে মাত্র ১০০ টাকা কমে তিনিসহ ছয়জন যাত্রী
গন্তব্যস্থলের দিকে যাত্রা শুরু করেন। এসি অ্যাম্বুলেন্স
বৃহস্পতিবার (০৭ জুলাই)
দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে (পশ্চিম গেইট)
এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন মাসুদ আহমেদ।
তিনি জানান,
যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মসজিদে ইমামতি করেন তিনি। বৃহস্পতিবার ঈদের নামাজ
শেষে তিনি বাড়ি ফিরছেন। প্রায় ১২ বছর ধরে এভাবে রাতে বাড়ি ফিরলেও দু’মাস
আগের তিক্ত অভিজ্ঞতা ভোলেননি তিনি।
মাসুদের ভাষ্যমতে, ওইদিন রাত
১২টার দিকে জরুরি বাড়ি যাচ্ছি। এসে দেখি গাড়ি নেই। আমার মতো আরো কয়েকজন
অপেক্ষা করছে। দেখলাম দু’টি অ্যাম্বুলেন্স আর একটি প্রাইভেটকার দাঁড়ানো।
সুজন নামে একজন ব্যক্তি (দালাল) আমাদের বলে, এতো রাতে গাড়ি নেই। রোগী নিয়ে
যশোর থেকে গাড়িটি এসেছে। এসির মধ্যে বসে আরামে চলে যান।
‘কিছুদূরে
একটি নির্জন জায়গায় গিয়ে চালক অ্যাম্বুলেন্স দাঁড় করালেন। সঙ্গে সঙ্গে
কিছু অস্ত্রধারী লোক এসে অস্ত্রের মুখে সব নিয়ে আমাদের নামিয়ে দিয়ে
অ্যাম্বুলেন্সসহ চলে গেল।’, যোগ করেন তিনি।
শুধু
অ্যাম্বুলেন্স নয় প্রাইভেটকার দিয়েও ফাঁদ পাতা হয়। এতে বাস টার্মিনালের
কিছু কাউন্টারের লোকজন জড়িত থাকে। রাতে বিপদে পড়া যাত্রীদের ফাঁদে ফেলে
সর্বশান্ত করে একটি চক্র এমনটিই জানালেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে
গাবতলী বাস টার্মিনালে দেখা মেলে ‘অন্বেষা’ নামে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট
জেনারেল হাসপাতালের একটি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি প্রাইভেটকার। তারা যাত্রীর
জন্য অপেক্ষা করছে।
অন্বেষা’র সুমন জানান, সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী নিয়ে এসেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ভাবছি খালি গিয়ে লাভ কি। কয়েকজন যাত্রী পেলে গল্প করতে করতে চলে যেতে পারবো। সঙ্গে কিছু টাকাও পাবো।’
যাত্রী
তুলে নিয়ে সব কিছু কেড়ে নেওয়া হয়-যাত্রীদের এমন অভিযোগের বিষয়ে সুমন বলেন,
জানি না। আমি তো বেশ কয়েকবার যাত্রী নিয়েছি, তারা কোনো অভিযোগ করেননি।
গাইবান্ধার
একজন যাত্রী জানান, ভাড়া কম নিয়ে সুন্দর কথা বলে অ্যাম্বুলেন্স বা
প্রাইভেটকারে নিয়ে যায়। আর গভীর রাতে কোনো অসুবিধায় না পড়লে তো কেউ বাড়ি
যায় না। সেই সুযোগ কাজে লাগায় একটি চক্র।
অ্যাম্বুলেন্স বা
প্রাইভেটকারে যাত্রী তুলতে সহায়তাকারী পরিচয় দিয়ে আজিজুল নামে একজন জানান,
অল্প কিছু টাকা দিয়ে যাত্রীরা সহজে যেতে পারে। সর্বশান্ত করার কোনো অভিযোগ
নেই।
পাবনার যাত্রী মো. নয়ন বলেন, ইসলামপুর থেকে কাপড় কিনে
মিরপুর-১৪ নম্বরে সরবরাহ করি। প্রায় সময় রাতে বাড়ি যাই। তবে কষ্ট হলেও বাসে
যাই।
তিনি জানান, কিছুদিন আগে তার এক বন্ধু অ্যাম্বুলেন্সযোগে
গাইবান্ধা যাওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্সের চালক তার সব নিয়ে রাস্তার পাশে হাত
পা বেঁধে রেখে গেছে। দু’দিন পর সে বাড়ি ফিরে আসে।
0 comments:
Post a Comment