পছন্দের তালিকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়!!

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়। এটিই দেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যা সময়ের ব্যবধানে পাঠশালা থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রার এক দশকে শিক্ষার্থীদের কাছে অনন্য অবস্থান করে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি এবং দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।
বিগত কয়েক বছরের তথ্য উপাত্ত থেকে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি আসনের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৬৯ জন ভর্তিচ্ছু। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে সম্মান প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি আসনের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বি করে ৩৯ জন ভর্তিচ্ছু।
২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি আসনের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৮২ জন ভর্তিচ্ছু। ওই শিক্ষাবর্ষে ঢাবিতে প্রতি আসনের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ৪৬ জন ভর্তিচ্ছু।
২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি আসনের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ৬৭ জন ভর্তিচ্ছু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ৩৯ জন ভর্তিচ্ছু।
কয়েকজন সিনিয়র অধ্যাপক রাইজিংবিডিকে বলেন, নবীন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভালো সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা ভর্তির ক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে পছন্দের প্রথম দিকেই রাখে।
তারা বলেন, বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য মেধাবীদের যে পরিমাণ আগ্রহ রয়েছে এবং তাদেরকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে তা কয়েক বছরের ব্যবধানে অনেকগুণ বাড়বে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিসিএস ও ব্যাংকসহ প্রতিযোগিতামুলক বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়ারা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে সুবিধা অতি সহজেই পাচ্ছেন, তার খুব কমই পান তারা। ভালো সুযোগ সুবিধা পেলে আরো ভালো কিছু করা সম্ভব হবে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এখানে রয়েছে শ্রেণিকক্ষের স্বল্পতা ও পরিবহন সঙ্কট। নেই আবাসন সুবিধা। সেমিনার কক্ষ ও গ্রন্থাগার সমৃদ্ধ নয়। নামেমাত্র মেডিক্যাল সেন্টার, নিম্নমানের ক্যান্টিনে চড়া মূল্যের খাবার। এছাড়া খেলাধুলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।
তারা আরো বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রার এক দশকে শুধু আশ্বাস আর বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করে চমক দেখানো হয়েছে। বাস্তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে এখনো তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধাই পাননি সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য বের হওয়া ও বিসিএস উত্তীর্ণ কয়েকজন বলেছেন, সুযোগ-সুবিধার অপর্যাপ্ততা এবং প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে খাপ খাইয়ে নিজেদেরকে এগিয়ে নিয়েছেন তারা। এতে নিজেদের অবস্থান যেমন ভালো হচ্ছে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামও বাড়ছে। এ কথা মানতেই হবে যে, সবদিক থেকে সব বাঁধা অতিক্রম করে জবি এগিয়ে যাচ্ছে।
তারা আরো বলেন, তবে এই এগিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের নিজেদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এ যাত্রায় তেমন কোনো ভূমিকাই রাখতে পারেনি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো যদি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যেত তাহলে আরো অনেক বেশি ভালো করা সম্ভব হতো।
জব মার্কেটে ভালো অবস্থান করে নেওয়া শিক্ষার্থীদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, জন্ম থেকেই এ প্রতিষ্ঠানের নানা সমস্যা রয়েছে। কারণ, একটি সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। তবে এসব সমস্যার সমাধান রাতারাতি সম্ভব নয়। আন্তরিকতার সঙ্গে সকল সমস্যার সমাধানে কাজ চলছে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে শিক্ষার্থীদের সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কেও একটি আধুনিক ও মানসম্পন্ন এবং দেশ সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তুলে ধরা সম্ভব। সংশ্লিষ্টদেরকে এদিকে মনোযোগী হওয়ার আহবান জানান তারা।
Categories: educational
0 comments:
Post a Comment